আমাদের প্রত্যেকের জগৎ টা ঠিক একই রকম।যদি বোঝাতে চান জগৎ তো সেই একই কিন্তু মানুষ গুলো ভিন্ন। কেউ উচ্চাবিলাসী কেউ বা বেঁচে থাকতে শিখেছি শুধু। আসলেই কি সেই জগৎ টাই কেবল আমাদের ভিন্ন করে রেখেছে।একই মুদ্রার দুই পিঠ বারংবারই জেনেছি আমরা। এ নিয়ে জ্ঞানী গুণি কিংবা চায়ের টঙে বসা চাচারাও অনেক উদাহরণ দিয়ে গেছেন নানান সময়।
চলেন এবার না হয় মুদ্রার এক পিঠ নিয়েই দুটি ভিন্ন অবস্থানের একই চাহিদা দেখি। যে পিঠে দরিদ্র থেকে উচ্চাবিলাসী সবার জগৎটাই একই, মইয়ে উপরে উঠার চেষ্ঠায় ছোট থেকে বড় হয় সেই চাহিদা পোষণ করেই। পরিবার শেখায় সেই ছোট বেলা থেকেই, সে হোক ধনীর ঘরে সোনার চামচ মুখে নিয়ে বড় হওয়া শিশু কিংবা দরিদ্র বাবার সেই অভাব না বুঝা শিশুটি যে বড় হয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট বা মোটা টাকার মাইনে পাওয়া চাকরি করতে হবে।
দুটি ভিন্ন অবস্থানের বেড়ে উঠা শিশুদের চাহিদা কিন্তু একই আর সেটাই বুলির মত মাথার মগজে ঢুকিয়ে দেয় বারবার। ভিন্ন কোনো স্বপ্ন নয় কিংবা নয় ভিন্ন ভাবে বেড়ে উঠা, চাকরি আর টাকা টাই যেনো জীবন সুন্দর করে তোলে। পড়াশোনার বস্তা ভরতি মাথা নিয়ে চাকরির বাজারে চড়া দামের হতে হবে যেনো জীবনে অভাব না থাকে টাকার কমতি না থাকে।
শিশুটি নিজের জীবন বুঝে উঠার আগেই বুঝে যে পড়াশোনা করতে হয় কেবল মাত্র চাকরি করে অর্থ উপার্জনের জন্যই। তাদের নিজেদের মাঝে যে লুকায়িত কোনো প্রতিভা থাকতে পারে সেটার বিকাশ করার আগেই, সেই পড়াশোনার লম্বা ঘোড়ায় চড়তে চড়তে মা-বাবার সেই চাকরির স্বপ্ন পূরণ করতে হবে তাই ভেবেই হারিয়ে যায় সেই গহীন ভূবনে।যেখানে টাকা আছে সেখানেই সুখ। দুটি অবস্থানেই ঠিক একই চাহিদা এখানে।ধনী হোক কিংবা গরীব তাদের শিশুরা যেনো বড় হয়ে অর্থের পৃথিবীতে অর্থহীন যেনো না থাকে। এটাই কি সেই একই জগৎ? একটু ভিন্ন হোক ভিন্ন ভিন্ন চিন্তায় তারা নিজেদের মেলে ধরুক ক্ষতি কি? কেউ তাদের মাঝের কবি টাকে জাগিয়ে তুলক কাব্যিক রচনায় ছন্দ সুরে তাল তুলক,কেউ গল্প লিখুক গল্পের রঙে রাঙিয়ে তুলক পৃথিবীকে,কেউ তুলির আঁচড়ে নতুন জীবন ফুটিয়ে তুলুক, গানের মাতাল কন্ঠে জাগিয়ে তুলুক এ সমাজ সভ্যতার।
ক্ষতি কি তাতে? কিন্তু দিনশেষে কোনো পরিবার কি এভাবেই ভাবে তার বেড়ে উঠা শিশুটিকে কি এভাবে ভাবানো যায় না নাকি এমন কোনো জীবন হয়না? চাকরি আর অর্থের বেড়াজালে কখন যেনো জীবনই হারিয়ে যায়, হারিয়ে যায় আমাদের সমাজ সংস্কৃতি আর সভ্যতার রবী,নজরুল,জয়নুল ও লালনেরা। আমাদের জীবনের বেঁচে থাকার মানে কেবলই অর্থ নাকি জীবন কে উপভোগ করে নিজের প্রতিভা দেখিয়ে হয়ে উঠা এক অন্যন্য। যে যেমন হয়ে বেড়ে উঠতে চায় তাকে তেমন ভাবেই উঠতে দেয়া উচিত শুধু পথটা যেনও বিপথ না হয় তাই দেখে শিখিয়ে বড় করা উচিত।আমাদের জগৎ টা যেনো নিজেদের মতই সুন্দর হয় তাই হোক আমাদের লক্ষ্য..
গোবিন্দ মোদক
শিক্ষার্থী,সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ।
সাবেক সভাপতি, সঞ্জীবন যুব সংস্থা, ময়মনসিংহ জেলা শাখা
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: 01783952169 (whatsapp)