‘উপদেষ্টাদের অনেকেই সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন’

অনলাইন ডেস্ক

সরকারের অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়ে সেফ এক্সিটের (নিরাপদ প্রস্থান) কথা ভাবছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের অনেককেই বিশ্বাস করাটা ছিল বড় ভুল। তাদের প্রতি আস্থা রেখে প্রতারিত হতে হয়েছে। উপদেষ্টারা অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন, তাঁরা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন।

সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্ট থেকে নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্যের ভিডিও ও ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে। এসব পোস্টে পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক দফা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে সরকার থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন নাহিদ। অবশ্য ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দেওয়া মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখনো উপদেষ্টা রয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা কেউ সরকারের উপদেষ্টা পদে যেতে চাননি। তাঁরা জাতীয় সরকার গঠনের আহবান জানিয়েছিলেন। সেটা হলে ছাত্রদের দায়িত্ব নিতে হতো না। রাজনৈতিক শক্তি বা অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাসও টিকত না। প্রথম ছয় মাস সরকারকে উত্খাত করা বা প্রতিবিপ্লব করার নানা ধরনের চেষ্টা চলমান ছিল।

এটা এখনো মাঝেমধ্যে আছে।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাদের এবং যাঁরা উপদেষ্টা হয়েছেন, তাঁদের অনেককে বিশ্বাস করাটা আমাদের অবশ্যই ভুল হয়েছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলকে আমরা যে বিশ্বাসটা করেছিলাম, যে আস্থা রেখেছিলাম, সেই জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি। অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে অথবা গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে বিট্রে (প্রতারণা) করেছে। যখন সময় আসবে, তখন আমরা এদের নামও উন্মুক্ত করব। ’

সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে এবং পোহাতে হবে। কিন্তু তারা যদি এটা বিশ্বাস করত যে তাদের নিয়োগকর্তা ছিল গণ-অভ্যুত্থানের শক্তি, রাজপথে নেমে জীবন দেওয়া ও আহত সাধারণ মানুষজন এবং তারা যদি তাদের ওপর ভরসা করত, তাহলে উপদেষ্টাদের এই বিচ্যুতি হতো না। ’

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘৫ আগস্ট ক্যান্টনমেন্টে সেজদা দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা, ছাত্ররা নয়। ’ সুধীসমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠন না করে, জাতীয় সরকার গঠন করলে আক্ষেপ তৈরি হতো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,912FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles