নড়াইলে বাস টার্মিনালে অবৈধ টোল আদায় বন্ধে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ

খন্দকার ছদরুজ্জামান,নড়াইল জেলা প্রতিনিধি

নড়াইল জেলা বাস টার্মিনাল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ইজারার মাধ্যমে টোল আদায় হয়ে আসছিল। তবে সম্প্রতি পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়। টার্মিনালের ভেতরে নির্ধারিত যানবাহন ছাড়াও পাশ দিয়ে যশোর-ঢাকা মহাসড়কে চলাচলকারী বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপসহ সব ধরনের পরিবহন থেকেও নিয়মবহির্ভূতভাবে টোল আদায় শুরু হয়। এতে সাধারণ চালক ও যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রতিদিন শত শত যানবাহন থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হতো।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১ অক্টোবর (বুধবার) দুপুরে নড়াইল সদর আর্মি ক্যাম্প থেকে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। তারা সরেজমিনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এবং টার্মিনালের আশপাশে পরিচালিত অবৈধ টোল আদায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে সতর্ক করে।

সেনাবাহিনীর এ পদক্ষেপের পর থেকে সাধারণ চালক ও যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও উন্নত হয়। স্থানীয়রা জানান, অবৈধ টোল আদায় বন্ধ হওয়ায় দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে তারা মুক্তি পেয়েছেন। বাসচালক সেলিম হোসেন বলেন, “প্রতিদিনই আমাদের টোল দিতে হতো। সেটা বাধ্য হয়ে পরিশোধ করলেও ছিল অবৈধ। সেনাবাহিনী এ উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা স্বস্তি পেয়েছি।”

একই কথা বলেন ট্রাকচালক মতিয়ার রহমান। তিনি জানান, আগে একাধিক স্থানে টোল দিতে হতো। এতে পরিবহন ব্যয় যেমন বাড়ত, তেমনি যাত্রীদের ভাড়ার ওপরও চাপ পড়ত। সেনাবাহিনী ব্যবস্থা নেওয়ায় তারা এখন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বলেন, “এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন এ ভোগান্তির মধ্যে ছিল। সেনাবাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা কৃতজ্ঞ। তাদের কারণে পরিবেশটা শান্ত হয়েছে।” এ বিষয়ে নড়াইল জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইজারার সুযোগ নিয়ে অনেক সময় কর্তৃপক্ষ নিয়ম বহির্ভূতভাবে টোল আদায় করে থাকে। এতে শ্রমিক ও চালকদের হয়রানি হয়। সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করায় এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানায়, সেনাবাহিনীর অভিযান চলমান থাকায় এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে ভবিষ্যতে যাতে পুনরায় এ ধরনের অবৈধ টোল আদায় শুরু না হয়, সে জন্য প্রশাসনকে নিয়মিত নজরদারির আওতায় রাখতে হবে। সেনাবাহিনীর এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয়রা বলেন, “সেনাবাহিনী মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। এই উদ্যোগে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, সাধারণ মানুষও স্বস্তি পেয়েছে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,912FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles